মোস্তফা মিয়া,পীরগঞ্জ রংপুর থেকে
রংপুরের পীরগঞ্জের ১১ নং পাঁচগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান লতিফ দীর্ঘদিন যাবৎ খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় মৃত ও ভূয়া ব্যাক্তির নাম ব্যবহার করে শতাধিক রেশন ও ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গত ১৮ জুন এলাকবাসীও সুবিধা বঞ্চিতদের নিকট থেকে জানাযায়,নিম্নলিখিত ৫৬১,৫৯৫,৫২৯,৫২৭,৫১০,৫৭০,৬২৮,৬৫৩,১০০,৭৬৯,৭৭৩,১০৮,৭৯৪,১০৩,৭৫২,৯৬৮,৯৮০,৯২৮,৯৩৩,৯৪১,৯৪৭,১২৫৫,১২৩৩,১৫১৫,১৫১৬,০৪,১৯,৪৪,১০২৩,১০২৯,১০৩১,১০৪১,১০৬৭,১১১৪,১১২৪,১০৬৫,১১৫১,১৪৯৮,৪১২,৪২৫,৪২৭,৩৫৩,৪০১,৪০৪,৪২০,৪২৬,৪৩১,৪৮১,৪৮২,৪৩৯,৪০৭ এবং ৪৫৪ নং রেশন ও ভিজিডি কার্ডধারি ব্যাক্তিগনের কেহ বা মৃত আবার অনেকেরই ভুয়া নাম। এদের ইউনিয়নের আমোদপুর, পাঁছগাছী, সাহাপুর, নাছিরাবাদ, সাদুল্ল্যাপুর, পানেয়া, এনায়েদপুর, পাইকান, জাহাঙ্গীরাবাদ ও বিরাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা দেখিয়ে কার্ড ইস্যুকরা হলেও এ সকল গ্রামে তাদের কাউকেই খুজে পাওয়া যায়নি। অথচ এ সকল মৃত ও ভুয়া ব্যাক্তিদের নামে চেয়ারম্যান নিয়মিত চাল উত্তোলন করেছেন। পাশাপাশি উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনোনিত মমেনা বেগম স্বামী মজমল মিয়া, বা”চুমিয়ার পুত্র কাবিলমিয়া ও তার স্ত্রী, প্রভারানি স্বামী মনোরঞ্জন, আঃ ওয়াহেদ মিয়ার পুত্র শহিদুল মিয়া ও তার স্ত্রী এবং মাকছুদা বেগম স্বামী শহিদ মিয়াসহ আরও প্রায় ৪০ জন ব্যাক্তি নিয়ম বর্হিরভুত ভাবে স্বামী স্ত্রী উভয়েই রেশন ও ভিজিডির চাল পায় বলে জানায় অত্র ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বাবলু মিয়া, সাধারন সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সহ অনেকে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান লতিফের এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ব্যাস্ততা দেখিয়ে সংযোগ কেটে দেন। একাধিকবার কথা বলার চেষ্ঠা করা হলেও ফোন ধরেনি তিনি।
বিষয়টি নিয়ে গত ২৮ এপ্রিল খাদ্য মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র মোতাবেক “খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ” উপজেলা শিক্ষা সুপার ভাইজার, ১জন ¯’ানীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ১জন ইউপি সদস্য এবং ইউপি সচিবসহ ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জমা করে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ভোক্তা যাচাই কমিটির আহবায়ক উপজেলা একাডেমিক (শিক্ষা) সুপার ভাইজার, আঃ বঃ মূঃ সাজেদুল বারীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, তদন্তের মাধ্যমে আমরা ৬৯ জন মৃত ও ভুয়া কার্ডধারি ব্যাক্তির নাম পেয়েছি। আমাদের রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জমাও করেছি, এখন পরবর্তি পদক্ষেপ কর্তৃপক্ষ গ্রহন করবে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুর রশিদ বলেন, এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়েছে কিনা আমি সঠিক বলতে পারছিনা। তবে জমা হয়ে থাকলে অই সকল মৃত ও ভূয়া ব্যাক্তিদের স্থানে নতুন লোক প্রতিস্থাপন করা হবে।
অপরদিকে তদন্ত কমিটির অপর সদস্য উক্ত ইউপি সচিব আব্দুল হালিমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,“ ভাই এ সব বাদ রাখেন তো, ইতি পুর্বেও অসংখ্য দুর্নীতি নিয়ে এই চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে অনেক লেখালেখি হয়েছে। কেউ কিছুই করতে পারেনি, উনি সব চোখের পলকেই ম্যানেজ করে নিবে।
উল্লেখ্য, সপ্তাহ আগেও উক্ত চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসক কর্তৃক সচিবের বদলির ¯’গিতাদেশ উপেক্ষা করে বির্তকিত হয়েছেন। এর জন্য ইতিমধ্যে জেলা প্রশাশক চেয়ারম্যানকে কারন দর্শানো নোটিশ দিয়েছে। যার উপযুক্ত জবাব গত ১৪ জুন জেলা প্রসাশকের কার্যালয়ে প্রদানের দিন ধার্য থাকলেও অদ্যবধি তার জবাব প্রদান করেননি চেয়ারম্যান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার টিএমএ মোমিন বলেন, এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা হওয়ার কথা আমি অবগত হয়েছি, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের প্রতিবেদন চুড়ান্ত হলেই এ ব্যাপারে সত্যতা যাচাই পুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
করোনা পরিস্থিতিতেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শতাধিক মৃত ও ভূয়া ব্যাক্তির নামে রেশন ও ভিজিডির চাল আত্মসাৎ এর ঘটনা প্রমানিত হওয়ার পরও অজ্ঞাত কারনে কোন প্রসাশনিক ব্যাবস্থা গ্রহন না করায় জনমনে অসন্তোষসহ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী ও সুবিধা বঞ্চিতরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অমান্যকারী ও অসহায় গরীব ও দুস্থদের রেশন ও ভিজিডির এর চাল আত্মসাৎ কারী এই দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান লতিফ এর বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে জরুরী ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বিভাগীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নিকট।